
শম্ভুনাথ সেনঃ
বীরভূমের সাঁইথিয়া ব্লকের আমোদপুর সংলগ্ন বক্রেশ্বর নদীর ধারে পাহাড়পুর গ্রামে অনুষ্ঠিত হল ৩-৭ জুন, পাঁচ দিনের দশহরা উৎসব ও গ্রামীণ মেলা। বহু প্রাচীন মনসামাতার মহাপূজা ও দশহরা উপলক্ষে এলাকার মানুষজন ছিল উৎসবে মাতোয়ারা। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর স্থানীয় অঞ্চলে জন সচেতনতার চমৎকার বাতাবরণ গড়ে ওঠে। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত হতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের ব্যাপক মানুষজন এই উৎসবে সামিল হয়। ৩ জুন বিভিন্ন মাঙ্গলিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দশাহরা উৎসবের শুভ সূচনা হয়। বিকালে অনুষ্ঠিত হয় বাল্যবিবাহ রোধের উপর এক বিশেষ আলোচনা সভা। উপস্থিত ছিলেন বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের সভাপতি রাজকুমার ফুলমালি, সম্পাদক এ এম, জামাল সাহেব, কোষাধ্যক্ষ মিঠুন দাস এবং আনন্দপাঠ শিক্ষা কেন্দ্রের সমাজসেবী মায়েরা। রাত্রিতে দূরদর্শন ও বেতার শিল্পী সনৎ মুখোপাধ্যায়ের মনসামঙ্গল পালা গান শুনতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। পরদিন বিকেলে ৬৪ জন এলাকার দুঃস্থদের মধ্যে ধুতি শাড়ি জামা গেঞ্জি প্যান্ট বিতরণ করা হয়। ৫ জুন মা মনসার মহাপূজা উপলক্ষে চন্ডীপাঠ, যাগযজ্ঞ সহ দুপুরে বড়মা ও ছোট মাকে কোলে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় গ্রাম পরিক্রমা ও গাছ মঙ্গলা অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিলেন হাজার হাজার ভক্ত এদিন পুণ্যার্থীরা।৬ই জুন বিকালে সাংড়া ও নানুবাজার আদিবাসী পাড়ার লোকনৃত্য দেখতে ছিল উপচে পড়া ভিড়। সন্ধ্যায় গুণীজনদের সংবর্ধনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যায় পরিবেশিত হয় বোলপুর সঙ্গীতায়নের নৃত্যনাট্য ও রকমারি গানের অনুষ্ঠান। রাতে জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অনুমোদনে তপন দাস সম্প্রদায়ের বাউল গান। প্রতিদিনই মনসামঙ্গল গান এবং নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি এই মেলাতে উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের প্রচারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি ও উভোক্তাদের অধিকার পণ্য পরিষেবা, পণ্যের গুণগত মান ও নিরাপত্তা উপভোক্তা সুরক্ষা আইন ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে পোস্টার ও প্রদর্শনী জনসাধারণের মধ্যে সাড়া ফেলে। এই উৎসব ও গ্রামীণ মেলায় জাতি ধর্ম নির্বিশেষে ব্যাপক মানুষের সমাগম ঘটে। সমগ্র অনুষ্ঠানের পরিচালনা ও সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন উদ্যোক্তাদের অন্যতম সদস্য জয়দেব দেবাংশী।
